Skip to Content

ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী এর প্রতিঃ

ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী এর প্রতিঃ

পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

পবিত্র মুহাররম মাসের দশ রজনীর পত্র

প্রতীক্ষিত ইমামের আবির্ভাব, বিশ্বজগতের পালনকর্তার পক্ষ থেকে ইমাম, সমগ্র বিশ্বে, শিয়ায়ে নূহের আদর্শে,

১৪২৫ হিজরির মুহাররম মাসের আট তারিখ তাহাজ্জুদের পর, ফজরের কিছু পূর্বে।

ইমামের অভিষেকের সুসংবাদ

অতএব, তুমি যখনই অবসর পাও একান্তে ইবাদত করিও এবং তোমার প্রতিপালকের প্রতি মনোনিবেশ করিও।

বনী আদমের মধ্য থেকে বনী আদমের জন্য ইমাম যিনি নূহ, ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মাদ সাঃ দের মত  দৃঢ়চিত্তের  নবী রাসুলগণের উত্তরাধিকারী। আমরা তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করিনা। তারাই হলেন রিসালাতের পঞ্চরত্ন। তাদের রিসালাতের মাধ্যমেই  আমরা দাজ্জাল বুশ কর্তৃক প্রজ্জলিত যুদ্ধের আগুন নিভাবো, ইনশাআল্লাহ।

১।  ইমামের মাকাম (অবস্থান) ফেরেশতা ও নবীদের মাকামের (অবস্থান) চেয়েও ব্যাপকবিস্তৃত। যে মাকামের জন্য নবীগণ ঈর্ষান্বিত হবেন। 

২। নিশ্চয় ইমাম ও ইমামত হল সমগ্রবিশ্বে আল্লাহর আরশের ছায়া।

৩। এই ইমামত আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত, কুরআনের শিক্ষার আলোকে আদিষ্ট এবং আল্লাহর আদেশে পঠিত। “পড় তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতএব, তুমি যখনই অবসর পাও একান্তে ইবাদত করিও।

৪। এই ইমামত এক এবং একক। তাতে কোন বিভক্তি নেই। নেই ইয়াহুদিবাদ, খৃষ্টবাদ, আরব জাতীয়তাবাদ, সুন্নিবাদ, শিয়াবাদের বিভক্তির লেশমাত্র।

৫। ইমামত হবে মুস্তাদআফদের মধ্য থেকে মুস্তাদআফদের জন্য, স্বৈরাচার ও স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে।

তুমি তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহের কথা জানাইয়া দাও।

১। আমি যেদিন জন্মলাভ করেছি সেদিন থেকেই আমার প্রতিপালক আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন সুরা দুহা ও সুরা ইনশিরাহ এর আলোকে।

২। আমি ইয়াহুদি, খৃষ্টান, সুন্নি, শিয়া ইত্যাকার যাবতীয় বিভক্তির ফিরকা থেকে মুক্ত ও পবিত্র শিয়ায়ে নূহের উপর প্রতিষ্ঠিত  এক  গৃহে জন্মলাভ করি।

৩। আমার রব আমার নামকরণ করেন ইমামুদ্দীন মুহাম্মাদ তোয়াহা। যাতে কোন বর্ণবাদ ও গোত্রবাদ নেই।

৪। আমার রব আমাকে ষাট বছর ধরে উত্তমরুপে লালন-পালন করেছেন জ্ঞান, প্রশিক্ষণ, পরিশুদ্ধতা ও অন্তর্দৃষ্টি দানের মাধ্যমে।

৫। অতঃপর আমার রব আমাকে মক্কা নিয়ে গেলে সেখানে আমি দৃঢ়-চিত্তের নবী রাসুলদের মিরাস (উত্তরাধিকার) লাভের মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতির জন্য ইমামের ধারণা লাভ করি। তবে সেটা বর্তমানের ইয়াহুদি, খৃষ্টান, সুন্নি, শিয়াদের ইমামত নয়। অতঃপর আমি সেখানে কয়েক বছর অতিবাহিত করলাম ভাল-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায় বোঝার জন্য।

৬। আমার প্রতিপালক আমাকে একদল সুন্নি বোবা, বধির, অন্ধ আলেমের সাথে তোমাদের কাছে নিয়ে যান। যার নেতৃত্বে  ছিল শায়খ হাফেজ্জী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। এই সফরে আমার উদ্দেশ্য ছিল তোমাদের মারজায়ে ফকিহদের সাথে পরিচিত হওয়া এবং সেখানে আমিই ছিলাম অনুবাদক ও দোভাষী। তারপর আল্লাহ আমাকে ইরান থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করালেন তাগুত সাদ্দামের সাথে সাক্ষাৎ করা ব্যতীতই কারণ আমি তার মুখ দর্শন করতে চাইনি।

৭। অতপর রাসুল সাঃ এর ভবিষ্যত বাণী করা গাজওয়ায়ে হিন্দের (হিন্দুস্তানে চূড়ান্ত অভিযান) জন্য প্রস্তুত করার নিমিত্ত্বে তা পূর্ণ করার কাজ আমার রব আমার দ্বারা শুরু করিয়েছেন।

পর্যবেক্ষণ/ দৃষ্টিপাত...... কর্তৃত্ব শুধু আল্লাহ্‌রই

১।  আল্লাহ তাঁর নূর পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় তাদের প্রতিশ্রুত সময় হল সকাল। আর সকাল অতি নিকটে, ইনশাআল্লাহ।

২। একক ইসলামী উম্মাহ ত্যাগ করে ভিন্ন ভিন্ন উম্মাহ তৈরি ও দলাদলির কারণে আল্লাহ ইয়াহুদি-খৃষ্টানদেরকে অভিশম্পাত করেছেন। তারা বলেছিল “ইয়াহুদি বা খৃষ্টান হলেই কেবল সৎপথ পাবে”।

৩।  ইয়াহুদি-খৃষ্টানদেরকে বাদ দিয়ে আল্লাহ আরবদেরকে ইমামতের জন্য মনোনয়ন দান করেন। তারা দূর্বল থাকলেও বদরের যুদ্ধের দিন তাদেরকে আল্লাহ সাহায্য করেন। অতপর তাদেরকে চূড়ান্ত বিজয় মক্কা বিজয় দান করেন। কিন্তু তারপর আরবরা কুফরি করল ও ইসলাম থেকে ফিরে গেল এই বলে যে নেতা শুধু কুরাইশ বংশ থেকে হতে হবে, মুস্তাদআফদের মধ্য থেকে নয়। এমনকি কয়েকদিন ফেলে রাখার পর নবীজিকে দাফন করা হল প্রতিষ্ঠিত জানাজা সালাত ছাড়াই, যে জানাজার সালাত তিনি মৃতদের জন্য পড়তেন।

৪। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দ্বীন ও খাতামুন্নাবিইয়্যিন সাঃ এর রিসালাতকে হেফাজত করেছেন। যেদিন থেকে রাসুল সাঃ ইন্তেকাল করেছেন, সেদিন থেকে এই ইমামত আসমান ও জমিনের মাঝামাঝি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে, উম্মাহর উপর কোন ইমাম নেই। বিশেষ করে মুস্তাদআফদের আমীর উসামাহ ইবন জায়েদের আমীর নিয়োগকে বাতিল করার পর। আর রাসুল সাঃ উসামাহকে আমীর নিয়োগ করেছিলেন ঐশী নির্দেশে, “আর আমি ইচ্ছা করেছি মুস্তাদআফদের প্রতি বিশেষ অনুকম্পা প্রদর্শন করতে......”- সুরা কাসাস-৫।

৫। এরপর আল্লাহ অনারবদেরকে (পারস্য) আরবদের স্থলাভিষিক্ত করলেন ইমামততের জন্য “আর তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তিনি তোমাদেরকে বদলিয়ে অন্য কোন জাতিকে নেতৃত্বের জন্য বেছে নিবেন” এ ব্যপারে রাসুল সাঃ এর ভবিষ্যৎ বাণী হল যে, “ দ্বীন যদি সপ্তর্ষিমণ্ডলেও পৌঁছে যায়, তাহলে সেখান থেকেও সালামান ফার্সির ইরানের কিছু লোক সে দ্বীন পৃথিবীতে এনে তা পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করবে।”

৬। আর আল্লাহ তোমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে সাহায্য করেছেন যেমন মুস্তাকবির শাহকে বিতাড়িত করেছেন। তাবাসেও আল্লাহ ঝঞ্ঝাবায়ু দিয়ে তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন। এবং ফাও দ্বীপে তোমাদেরকে আল্লাহ তাঁর সৈন্য পাঠিয়ে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু তোমরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পলায়ন করে প্রশস্ততা থেকে সংকীর্ণতার দিকে গিয়েছিলে। এবং তোমরা সংবিধান বানিয়েছ যে তোমাদের ইমাম শুধু ইরানিদের মধ্য থেকে হতে হবে এবং অবশ্যই শিয়া হতে হবে। অথচ এগুলো থেকে আল্লাহ ও তাঁর দ্বীন সম্পূর্ণ মুক্ত।

নিশ্চয় হুসাইনকে হত্যা করা রাসুল সাঃ কে কাগজ না দেওয়া ও জায়েদ এবং উসামার আমির  নিয়োগের বিরোধিতা করার চেয়ে লঘু অপরাধ ছিল। আর এই বিরোধীতা করা হয়েছে কুরাইশ বংশের দুই ব্যক্তি আবু বকর ও উমরের সামনে আর তাতে সহায়তা করেছে আয়েশা এবং হাফসা, রাসুলের নির্দেশ অমান্য করে, তাঁর বিরুদ্ধে। আর ফাতেমার দুই পুত্রের হত্যাকাণ্ড ছিল আহলে বাইত থেকে অপবিত্রতা দূরকরণ। হুসাইন মাজলুম হিসেবে নিহত হয়েছে, কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য প্রশংসা। তাকে হত্যা করেছে অপবিত্রের পুত্র অপবিত্র ইয়াজিদ, কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য গালি।

শেষ ভাল যার, সব ভাল তার

আল্লাহ তাঁর নূর পূর্ণ করবেনই যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করুক না কেন………

১। আল্লাহর আদেশ ও বিধান, সুন্নাত হল “তিনি যেভাবে প্রথমে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা সেভাবে ফিরে আসবে”। আল্লাহ পৃথিবীকে চতুর্দিক হতে সংকুচিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তিনি অস্তাচল থেকে দাজ্জাল বুশের নেতৃত্বে তাগুত শাসকদেরকে শাতিল আরব ও লোহিত সাগরের পানিতে বিলীন করার জন্য উপস্থিত করেছেন। আল্লাহর ওয়াদাকৃত মুস্তাদআফদের ইমামের হাতে পানিতে লবণ মিশে যাওয়ার মত তারা মিশে যাবে। “জনগণের ফরিয়াদ, আল্লাহর আওয়াজ”।

২। নতুন চাঁদ উদিত হয়েছে, বিপ্লবের চাঁদ। সালমান ফার্সির গগন থেকে। অতঃপর তা পূর্ব দিগন্তে এসে পূর্ণিমার রূপ ধারণ করেছে,  মালের দিক দিয়ে মুস্তাদআফ, জনবসতিতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের দিগন্তে যেখানে ভারত, পাকিস্তান ও আরবের মত শিয়া সুন্নির তিক্ততা, হানাহানি ও সংঘাত নেই।

৩। এদেশের দুই নারীর পেছনে ইসলামী নামধারী রাজনীতিবিদ ও হারামখোর আলেমরাও কুকুররুপে ধাবমান। তবে এখানকার বেশীরভাগ মানুষ বিকল্প চায়। কিন্তু ইরানীদের ভূমিকা সত্য-অসত্যের মাঝে গোলক ধাঁধাঁয় পতিত। ইরানী দূতাবাসগুলো খালেদা হাসিনার মত বেপর্দা বেহায়া ভ্রষ্টা মহিলাদের তাদের রাষ্ট্রীয় দিবস সমূহে দাওয়াত দেয়। আর তেহরান ব্রিটেনের যুবরাজকে স্বাগতম জানায়। আর সেখানে মুছে ফেলেছে ইসলামবুলি মহাসড়কের নামফলক। তাহলে সেখানে শাহবানু ও তার দুই ছেলেকে ফিরিয়ে  আনা ছাড়া আর কি বাকি থাকে?

৪। এই ভূমিকম্পতুল্য পরিস্থিতিতে আমাদের মত মুস্তাদআফদের সাহায্য করার জন্য আল্লাহ ছাড়া আর কে রইল? তিনি আল্লাহই তাঁর শ্রেষ্ঠ কৌশল ও মু’জিজার মাধ্যমে সাদ্দামকে তার মনিবের খাঁচার ভেতরে ফিরিয়ে আনলেন। যে সাদ্দামকে তারা প্রহরী কুকুররূপে পৃষ্ঠপোষকতা করত যাতে প্রতিবেশী দেশগুলোর উপর আগ্রাসন চালাতে পারে। এভাবেই আল্লাহ কুকুরদেরকে খাঁচায় ভরার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। শিয়া ইরানি বিপ্লব আট বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এদের একজনকেও খাঁচায় ভরতে পারে নি, গাদ্দাফিকেও না, ফাহদকেও না,  বাশারকেও না। কিন্তু আল্লাহ তা শুরু করেছেন এবং সেই প্রক্রিয়া এখনও চালু আছে এবং তা চালু থাকবে যে পর্যন্ত না আল্লাহ এই পৃথিবীকে তাগুতদের অপবিত্রতা থেকে মুক্ত করে মসৃণ সমতল ময়দানে পরিণত না করবেন।

৫। অতএব এখন এই অবস্থায় আমার প্রতি আল্লাহর চূড়ান্ত আদেশ হল আমি যেন দৃঢ়চিত্তের রাসুলদের মত ব্যপকভিত্তিক ইমাম হিসেবে দাঁড়িয়ে যাই, যার ব্যাপকতায় সব রাসুলের রিসালাত শামিল হবে। কারণ আল্লাহ আমাকে এই গুরুভার বাণী বহন করার অনুগ্রহ দান করেছেন। “নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি গুরুভার বানী অবতীর্ণ করিতেছি”।   

৬। আল্লাহ আমা থেকে তালেবানি নাপাকি দূর করেছেন। বিশেষ করে আল কায়েদা ও তার হিংস্র নেতৃত্ব থেকে। যার কর্ণধার হল মোল্লা উমর ও বিন লাদেন। সুতরাং এখন নতুন করে ওহী নাজিলের শুরুর মত আমাদের শুরু করতে হবে। এই উম্মাহ আল্লাহর আরশের মানদণ্ড বা আদর্শ ভুলে গেছে। সেই আদর্শ হল মুস্তাদআফদের ইমামত। এখন আল্লাহ তাআ’লা আমাদের জন্য একটি ইঙ্গিত দিলেন আরশ থেকে, উসামা বিন লাদেন ও আইমান আল জাওয়াহিরির মাধ্যমে। যাতে আমরা স্মরণ করতে পারি হুনাইনের বীর আইমান ইবনে বারাকাহ ও খসরুর পারস্য বিজয়ের পূর্বে পরাশক্তি রোম বিজয়ের নায়ক অসম সাহসী বীর উসামাহ বিন যায়েদ কে। আল্লাহ  তার কার্য সাধনে প্রবল।

৭। তোমাদের কাছে আমার এই আযান ও আহবান আসছে নূহের আহবানের মত। এবং নূহ আমাকে ডেকেছিল, আর আমি কত উত্তমভাবে তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। আমি ছিলাম নৈরাশ্যজনক অবস্থায়। যেরূপ, “অবশেষে যখন রাসূলগণ  নিরাশ হইল এবং লোকে ভাবিল যে, রাসূলগণকে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হইয়াছে”। আমি তোমাদের নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাতে তাদের মাঝে বনী আদমের বিশ্ব নেতৃত্বদানের অযোগ্যতা দেখে খুবই নিরাশ হয়েছিলাম। আমি তোমাদের ভিতর-বাহির সব জানার জন্য একবার ব্যক্তিগত সফরে ইরান গিয়েছিলাম। আমি সেখানে সাক্ষাত করেছি ভাই আয়াতুল্লাহ আহমাদ জান্নাতি, শেইখ মুহাম্মাদ আলি তাসখিরি, তোমাদের রাষ্ট্রদূত মাদার শাহী, আখুনযাদেহ মুহাম্মাদ বাস্তি, ইউসূফী এরা সবাই আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। অতপর তোমাদের পশ্চাৎ ধাবন ও দূর্বলতার কারমে ক্রমে ক্রমে তোমাদের সাথে আমি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলাম। তারপর ২০ বছর ধরে আমি আমার স্রষ্টা, আমার রবের মারেফত লাভে নিমজ্জিত হলাম। এখন তোমাদের ও বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানের জন্য সময় আসল নিরস্রীকরন ও শত্রুর মোকাবেলা করার। আর সারা বিশ্ব বড় শয়তানের অধীনে তোমাদের উপর সব দিক দিয়ে অবরোধ আরোপ করল।  

মহান আরশের অধিপতির সাথে আমার মুনাজাত ও অঙ্গীকারের ফলাফল হল যে আমি তোমাদের প্রতি পত্র লেখার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, নবুয়তি দলিল-প্রমাণের পত্র। আমি ভ্রাতৃপ্রতিম ইরানী বিপ্লবের উপর বিস্তারিত একটি পত্র লিখেছি এবং তোমাদের জন্য উহা আয়াতুল্লাহ শাহরুখীর নিকট প্রেরণ করেছি। পরে মুহাম্মাদ আলী তাসখিরীর নিকট থেকে তার প্রাপ্তি স্বীকার পত্র আমি হাতে পাই। ঐ পত্রটি দশ বছর পর আবার আমি পড়ছি। তাতে আমি দেখতে পেলাম যে আল্লাহ আমার হাত দিয়ে যে পত্র লিখিয়েছিলেন তাতে তোমাদের বর্তমান পরিণামের কথা লিপিবদ্ধ আছে, আর সেটা হল তোমাদের বর্তমান মৃত্যুতুল্য নাফসি,নাফসি অবস্থা। এখন এই পত্রের মাধ্যমে আমি চাইছি যে তোমরা আবার পড়। যাতে তোমরা বুঝতে পার যে আমার চাইতে আন্তরিক উপদেশ দানকারী আর কেউ আছে কি না।

আফগানিস্তান ও ইরাকের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরু করার পূর্বে আহলে কিতাব ইয়াহুদি ও খৃষ্টানদেরকেও অনুরূপ একটি পত্র লিখেছিলাম। এবং সেটা বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্রচার মাধ্যমগুলোকে দিয়েছিলাম প্রচার করা ও বিলি-বণ্টন করার জন্য। এটিও ছিল একটি পরিণামের চিঠি। পৃথিবী বর্তমানে এমন জটিলতায় আটকে আছে যেখান থেকে বের হবার কোন পথ নাই একমাত্র আল্লাহর আশ্রয়ে যাওয়া ছাড়া। নয়তো সম্পূর্ণ ধ্বংস অনিবার্য। অবশেষে আমি পুনরুত্থান, পুনর্জাগরণের দলিল-প্রমাণের চিঠি লিখেছি এবং সেটা ই-মেইলে সংশ্লিষ্ট সকলকে পাঠিয়েছি জিলহজ্জ মাসের আট তারিখে এবং স্বাভাবিকভাবেই সেটা আমি ইরানের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু আমি নিশ্চিত না যে সেটা তোমাদের কাছে পৌঁছেছিল কিনা।   

আমি আমার প্রতিপালকের নির্ধারিত চল্লিশ রাত্রির মীকাতে আছি। যা জিলহজ্জের প্রথম রাত্রে শুরু হয়েছে এবং আগামী মুহাররম মাসের দশ তারিখ আশুরার রাতে তা পূর্ণ হবে। দশ রাত্রি। আর তাতে জ্ঞানীদের জন্য শিক্ষণীয় রয়েছে। আমি তোমাদেরকে আল্লাহর জন্য আহবান করছি যেন তোমরা রাসুল সাঃ এর  ভবিষ্যৎ বাণীর সত্যায়ন করে আমার সাথে শরিক হয়ে আল্লাহর দ্বীনকে সম্পূর্ণরূপে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পার। আমি তোমাদের জন্য কয়েকটি পত্রের অনুলিপি পাঠাচ্ছি সেগুলো দ্বারা শিক্ষা গ্রহনের জন্য। আল্লাহ সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছেন যাতে কাফিরদের উপর শাস্তির কশাঘাত হানতে পারেন।

দৃষ্টান্তমূলক তওবা করার মাধ্যমে তোমরা ধেয়ে আস। আমিই প্রথম আল্লাহর কাছে তওবা করছি। তোমরা আমার পক্ষ থেকে মুস্তাদআফদেরকে উপদেশ দাও, বিশেষ করে আমার ওইসব শিয়া ভাইদেরকে যারা ভুলবশত আলী কুরাইশীর শিয়া হয়েছে। যাতে তারা সেটা ত্যাগ করে তওবা করে শিয়ায়ে নূহে আসতে পারে। এবং যাতে আবু বকর, উমর ও উসমানের সুন্নীদের মাথা গুঁড়িয়ে পায়ের তলায় পিষ্ট করা যায় ও যাতে মুসলিম ইবনে আকীলকে হত্যা করার ও তার মৃতদেহকে মসজিদের মিনার থেকে ফেলে দেওয়ার মত আর একটি লোকও পৃথিবীতে অবশিষ্ট না থাকে। সেখানে মুসলিম ইবনে আকীল একজন ছিল, আর নিশ্চয় এখন ইরাক-ইরান যুদ্ধে হাজার হাজার মুসলিম ইবনে আকীলকে হত্যা করা হয়েছে এবং কারবালার ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রতিদিন আরও হাজার হাজার মুসলিম ইবনে আকীলকে হত্যা করা হচ্ছে। সুতরাং এখন আকীল আর হুসাইন এর জন্য মাতম করা ও বুক চাপড়ানোর কোন যৌক্তিকতা নেই। কারণ হাজার হাজার আকীল-হুসাইন এখন মারা যাচ্ছে। এখন আমাদের প্রতিশোধ নেবার পালা, “অতএব, তোমরা মক্কার কাফিরদের বাধার মুখোমুখি হলে গর্দানে আঘাত হানবে। তাদের সম্পূর্ন পরাজিত করা পর্যন্ত এ আঘাত চালিয়ে যাবে। এরা ধরাশায়ী হলে এদের কষে বাঁধবে। তারপর অবস্থা বুঝে, হয় মুক্তিপন নিয়ে ছাড়বে, বা কৃপা করবে। তবে স্মরণ রাখবে যে, এরপর ওদের যেনো আর অস্ত্র ধারণ করার যোগ্যতা না থাকে”।

ইসলামী উম্মাহ হল মধ্যমপন্থী উম্মাহ। এতে নেই কোন সন্ত্রাস ও বৈরাগ্যবাদ। যাদের সাথে তোমাদের যোগাযোগ আছে তাদেরকে বল, বিশেষ করে আজকের ইরাকের আয়াতুল্লাহ সিস্তানিদের মতদেরকে যে তারা যেন সর্বপ্রকারের শত্রুতা ও বিবাদ এক্ষুনি বন্ধ করে, চূড়ান্ত ঘোষণা সহকারে। যাতে বনী আদমের সবাই আল্লাহর দাসে পরিণত হয়। এমনকি ইয়াহুদি নাসারাদের মাঝে যারা মুমিন আছে তারাও যেন মানুষের মাঝে ঐক্যের কালেমার ভিত্তিতে  আল্লাহর দাসে পরিণত হতে পারে। আর সেই ঐক্যের কালেমা হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তোমরা তোমাদের বিপ্লবের শুরুতে সঠিক কালেমা “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”র পতাকা বহন করতে। কিন্তু পরবর্তীতে তোমরা যখন জালেমদের দিকে ঝুঁকে পড়লে তখন তোমরা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” একসাথে করে ফেললে কোন প্রকার পৃথকীকরণ অব্যয় ব্যতীত! অতপর তোমাদের পশ্চাদগামীতা শুরু হল এবং এমনকি পিছু হটতে হটতে এখন তোমরা বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছ। এখন তোমরা ইয়াহুদি খৃস্টান ও আরবদের মত সংশোধিত ইসলাম চাও। উহারা চায় যে, তুমি নমনীয় হও, তাহা হইলে উহারাও নমনীয় হইবে। এই নীতি তোমাদের কোন উপকারে আসবে না। তোমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সাদ্দাম এখন দাজ্জালের জালে বন্দী। এবার তোমাদেরকে ধরার পালা, সেটা আজ হোক অথবা কাল হোক। এতে কোন সন্দেহ নেই। এখন কালক্ষেপণ না করে আজকেই তোমরা তোমাদের ভাগ্য ও পরিণতি নির্ধারণ কর এবং ঘোষণা কর নবুয়তি বোমা ও আনবিক বোমার বিস্ফোরণের কথা, কিয়ামতের মহাপ্রলয়ের ভূকম্পনের মত  যাতে সেটা আগামীকাল আশুরার দিনে পৃথিবীবাসীর কানে পৌঁছায়।

এই পত্র পাবার সঙ্গে সঙ্গে তোমরা সমবেত হও এবং তোমাদের অন্যান্য জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গকে সমবেত করে বল, “নিশ্চয় আমার নিকট এসেছে সম্মানিত এক পত্র কিন্তু আমি কোন ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি না তোমাদের উপস্থিতি ব্যতীত”। আল্লাহ যদি তোমাদেরকে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও গুরুভার বাণী বহন করার তওফিক দান করেন ইনশাআল্লাহ তোমরা দেখতে পাবে যে বুশই হবে আমেরিকার সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট। সে এসেছে মাসীহের নামে দাজ্জাল হিসেবে। সে বৈধভাবে নির্বাচিত কোন প্রেসিডেন্ট না। শয়তান তাকে মিথ্যাবাদী দাজ্জাল হিসেবে পৃথিবীবাসির উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তার প্রতিশ্রুত সময় নিকটে। হে আল্লাহর দাসেরা! আল্লাহকে ভয় কর,নিজেদের অবস্থা সংশোধন কর, আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসুলের আনুগত্য কর আর অন্য কারো আনুগত্য করে তোমাদের আমল বরবাদ করোনা।

হে ভাই আলী খামেনী! তোমাদের সাথে সাক্ষাতে আমি লক্ষ্য করেছি তোমার মাঝে গভীর পড়াশুনা রয়েছে। তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে আশা করি যেন তিনি তোমাদেরকে সালমান আল ইসলাম, সালমান আল ইসলাম, সালমান আল ইসলামের মত সালমান হিসেবে কবুল করেন। রাদিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আন আমছালুহু। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

আমার এই পত্রের শেষে আমি তোমাদেরকে ও আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি আমি আমার নিজেকে দেখতে পাচ্ছি আলাস্তু বি রাব্বিকুম এর সেই শপথ অনুষ্ঠানে, যেদিন আমার পিতা আদম আঃ ও আমার আদম-সন্তান ভাইবোনদের সাথে আমি শপথ নিয়েছিলাম। আমি এখনও সেই ওয়াদার উপর আছি। আমি বনী আদমের বংশোদ্ভূত ও বনী আদমের জন্য একজন ইমাম হিসেবে তোমাদেরকে আল্লাহর পথে আহবান করছি। যেরূপ আহবান করেছিলেন নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা ও মুহাম্মাদ। সালাওয়াতুল্লাহি আলাইহিম ওয়া আলাইনা। শান্তি বর্ষিত হোক তাঁদের  উপর এবং আমাদের উপর। যাতে মানুষ দুই দল হতে পারে, হয় মুসলিম নয় কাফির, হয় সাদা নয় কালো, হয় নূর, নয় নার (আগুন)। আমি আমার মৃত্যুর পূর্বেই নিশ্চিতভাবে দেখতে পাচ্ছি যে আমি আমার পিতৃপুরুষ সকল রাসুলের সাথে কিয়ামতের দিন আমার রবের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমাকে সেই নাম ধরে ডাকা হচ্ছে যে নামে তিনি দুনিয়াতে  আমার নামকরণ করেছিলেন। কেননা আমি বিশ্বাস স্থাপন করেছি আল্লাহতে, সমগ্র ফেরেশতাকুলে, তাঁর কিতাব সমূহে, তাঁর রাসূলগণে এমনভাবে যে তাদের মধ্যে আমরা কোন পার্থক্য করিনা। আর আমি বিশ্বজগতের মহান প্রতিপালকের কাছে আত্মসমর্পণ করেছি।

হে মানব মণ্ডলী! আমার কথা শোন ও আমার আনুগত্য কর। আল্লাহ তাঁর অপরাজেয় কর্তত্বের মাধ্যমে তোমাদেরকে কল্যাণের সঙ্গে প্রবেশ করাবেন এবং কল্যাণের সাথে নিষ্ক্রান্ত করাবেন। তোমাদের পরলোকগত ইমাম, সৎ ব্যক্তি, ইমাম রুহুল্লাহ মুসুভী খোমেনী, তার যতটুকু যোগ্যতা ছিল ততটুকু দিয়ে সে তোমাদেরকে আহবান করেছে, (“বল, প্রত্যেকেই নিজ প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ করিয়া থাকে”) সে তোমাদের জন্য ঘোষণা করেছে, “আমাদের মনোবাসনা এই যে আমরা বাইতুল মুকাদ্দাস,আল-কুদস আগে মুক্ত করব কিন্তু যুদ্ধ থেকে ইরাকের জনগণকে মুক্ত না করে আমরা সেখানে যেতে পারি না। আর সে এই বলে তোমাদের থেকে মৃত্যুবরণ করেছে যে, “আমি বর্তমান ধরণের মসজিদ ও মাদরাসার ইমাম ও হুজুরদের থেকে বেজার হয়ে বিদায় নিচ্ছি”।

রক্তপিপাসু সাদ্দামের চাপিয়ে দেয়া কোন যুদ্ধ এখন আর তোমাদের উপর নেই। সে এখন খাঁচায় বন্দী। সুতরাং তোমরা ইরানের ভুমি, মসজিদসমূহ ও মাদরাসাগুলোকে ইবরাহীম ও ইসমাইল আঃ দের অঙ্গীকারের আলোকে পবিত্র কর। যাতে সেগুলো মানব জাতির জন্য আশ্রয়স্থল হয় এবং মক্কা, মদিনা ও আকসা পবিত্র করার লং মার্চ অভিযান শুরুর কেন্দ্র হয় যাতে মুমিনরা সেখানে আল্লাহর অনুমতিক্রমে বাসিন্দা ও বহিরাগত সবাই সমান হতে পারে।

আমি তোমাদের জন্য আরও তিনটি পত্র পাঠাচ্ছিঃ

১। আল্লাহর দ্বীনের জন্য ইরানের ভূমিকে পবিত্র করণের জন্য ইরানী জনগণ ও ওলামা পরিষদের প্রতি আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির মাধ্যম পত্র।

২। মক্কা মদীনা ও আকসা পবিত্র করার জন্য জিলহজ্জের আট তারিখে লেখা পত্রের ফটোকপি

৩। ইয়াহুদি, খৃস্টান ও নামধারী মুসলমানদের মিল্লাতে ইবরাহীমে প্রত্যাবর্তনের জন্য লেখা পত্রের ফটোকপি।

 

এটাই হল বনী আদমের মুক্তি ও বিজয়ের রোডম্যাপ, ঢাকা থেকে হিন্দুস্তান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান ও ইরাকের পথ হয়ে তা স্পর্শ ও পবিত্র করে মক্কা, মক্কা থেকে বিশ্ব। ঢাকা থেকে মক্কা, মক্কা থেকে বিশ্ব। তার ফলে শয়তান ও তার দোসরদের অংকিত সকল রাষ্ট্রীয় সীমানা চিহ্ন মুছে যাবে। আশা করি এই পত্র তোমরা গ্রহণ করবে ও ই-মেইলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে। আল্লাহই আমাদের অভিভাবক, তিনিই তাওফিক দাতা।

~ ইমামুদ্দীন মুহাম্মাদ তোয়াহা বিন হাবীব

ই-মেইলঃ [email protected]

ফোনঃ +880 1552 331 779

ঠিকানাঃ ২৪৮/২, দ্বিতীয় কলোনি, মাজার রোড, মিরপুর-১ ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। 

Sign in to leave a comment